| পরীমনি |
বাংলাদেশে গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি আবারো এই ইস্যু আলোচনায় এসেছে এক জনপ্রিয় অভিনেত্রীর নাম জড়িয়ে যাওয়ার কারণে। অভিনেত্রী পরীমনি গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের বিরুদ্ধে চলতে থাকা মিডিয়া ট্রায়ালের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন এবং দাবি জানিয়েছেন এর অবসানের।
পরীমনির বক্তব্য
পরীমনি বলেছেন, "আইনের আগে সবাই সমান। যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তা তদন্ত করে বিচার হোক। কিন্তু কারো সম্মান নিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল করে খেলা করা ঠিক না।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, গণমাধ্যমে যেভাবে একতরফাভাবে তার নাম নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে, তা তার ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনকে প্রভাবিত করছে।
মিডিয়া ট্রায়াল: ন্যায়বিচারে প্রতিবন্ধক?
বাংলাদেশসহ অনেক দেশে মিডিয়া ট্রায়াল এক বিতর্কিত প্রসঙ্গ। কোনো ঘটনার তদন্ত শেষ না হতেই মিডিয়ায় অভিযুক্তকে ‘অপরাধী’ হিসেবে তুলে ধরা অনেক সময়ই জনমতকে প্রভাবিত করে ফেলে। এর ফলে প্রকৃত বিচারপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
পরীমনির ক্ষেত্রে, অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তাকে কেন্দ্র করেই বিতর্কিত শিরোনাম তৈরি হচ্ছে। এতে ব্যক্তি হিসেবে তার মানহানি হচ্ছে, পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও নানা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
গৃহকর্মী নির্যাতন: মূল ইস্যু ভুলে যাচ্ছি?
গৃহকর্মী নির্যাতনের মতো ভয়াবহ সামাজিক ইস্যু যখন আলোচনায় আসে, তখন সেটি নিয়ে সমাজে সঠিক বার্তা দেওয়া জরুরি। কিন্তু অনেক সময়ই আমরা মূল সমস্যা থেকে সরে গিয়ে 'কে জড়িত', 'তার পেশা কী', কিংবা 'তার আগে কী ঘটেছিল' এসব নিয়ে বেশি আলোচনায় মেতে উঠি। ফলে, প্রকৃত ভিকটিম এবং তার ন্যায়বিচার পাওয়ার বিষয়টি আড়ালে পড়ে যায়।
উপসংহার
পরীমনির দাবি যেমন তার ব্যক্তি অধিকার রক্ষার প্রশ্ন তোলে, তেমনি গৃহকর্মী নির্যাতনের ইস্যুটি সমাজের গভীর এক অসাম্য ও অবিচারের চিত্রও তুলে ধরে।
আমাদের উচিত—আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা, বিচার শেষ হওয়ার আগেই কাউকে অপরাধী হিসেবে না দেখানো, এবং গৃহকর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা।